মূল নিউজঃ ইত্তেফাক
কথা হচ্ছিলো নাটোর জেলার বনপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ জাকির হোসেন দুইশো থেকে তিনশো মুরগি পালন করতেন৷ সম্প্রতি "গ্রো-আপ" নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এক হাজার মুরগি কিনে দেওয়া হয়েছে তাকে। জাকির বললেন, "মুই আগে খামারে ২০০ মুরগি পালতাম সেই একই খামারে ১০০০ মুরগী পালি। খরচ খুব একটা বাড়ে নাই তয় আগে থেকে পরিশ্রম বেশি দিয়া লাভ অনেকডি বাড়ছে মুরগি বেশি রাখতাছি তাই খরচ খুব একটা বাড়ে নাইক্কা। সামনে একটা পোলাও রাখমু সাহায্য করার লাইগা। গ্রো-আপকে ধন্যবাদ।"
আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে গ্রো-আপ আবার কি? এনজিও প্রতিষ্ঠান রোসা বাংলাদেশকে আধুনিক কৃষিভিত্তিক গ্রো-আপ প্রকল্পের মাধ্যমে আপনাকে কৃষকের পাশে থাকার সুযোগ করে দিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, "বাংলাদেশের কৃষকের কৃষি উন্নয়নে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা মূলধন বা পুঁজি। পুজি স্বল্পতার কারণে, বীজ থেকে শুরু করে কৃষি সরঞ্জামাদি, কীটনাশক সকল ক্ষেত্রেই বাধার সম্মুখীন হতে হয়। ব্যাংক ঋণ নেওয়ার মতো দলিলিজ্ঞান ও কাগজপত্র সক্ষমতা তাদের নেই, তাই মহাজনীয় প্রথায় ঠকতে ঠকতে লাভের কিছুই আর ঘরে নিতে পারে না। বঞ্চিত এমন সামাজিক প্রেক্ষাপটের কৃষকের সন্তান আর কৃষক হতে চায় না এছাড়াও রয়েছে মধ্যস্থ ভোগীদের কারসাজি কারণ কৃষকের পক্ষে ফসল নিয়ে শহরে এসে কিংবা সরাসরি ভোক্তার নিকট বিক্রয় করা সম্ভব হয় না, এক্ষেত্রে ব্যাপারীদের কাছে কৃষক ফসল বিক্রি করতে বাধ্য থাকে। এসব বেপারী একজোট হয়ে কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের দাম কমিয়ে দেয়, বিধায় কৃষকগণ কম দামেই পণ্য বিক্রি করতে হয়। তাই মধ্যস্থ ব্যাপারীদেরকে পিছিয়ে ফেলে আপনি- আমি কৃষকের কৃষিতে যদি পাশে থাকতে পারি তাহলে কৃষিতে বিপ্লব আসবেই, সাথে দেশ আগাবে।"
এরকম রয়েছে হাজারো গল্প, নাটোর কলসনগরের, স্বামী পরিত্যক্তা রহিমা খাতুন তার তিন সন্তান নিয়ে নিদারুণ কষ্টে জীবন অতিবাহিত করছিলেন। একমাত্র সম্বল গরুটি ও বিক্রি করে দিতে হয় তার মেজো মেয়ে অপারেশন এর সময়, এমন সময় গ্রামের বহু পুরাতন এনজিও সংস্থার প্রকল্প গ্রো-আপ কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন হয়ে অফিসে আসেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার তার সকল বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনার পর রহিমা খাতুনের গরু পালনের পূর্ব অভিজ্ঞতাটি বিশেষ বিবেচনাতে নেয়ার মাধ্যমে তাকে দুটি গরু কিনে দেয় পাশাপাশি মোসাম্মৎ রহিমা খাতুনকে গরু পালনের বিষয়ে নতুন নতুন কিছু পরামর্শ দেন।
মোসাম্মৎ রহিমা খাতুন বলেন, "আমি যখন একবেলা আধা পেটা খেয়ে দিন পার করছিলাম গ্রো-আপ আমাকে দুটি গরু কিনে দেয় তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখে এবং আমার গরু গুলার খোরাক ও চিকিৎসা পাতির জন্য ডাক্তারও নিয়ে এসেছে এখন আমার পাঁচটা গরু এর মধ্যে তিনটা বিক্রি করে ঋণশোধ করেছি এবং দৈনন্দিন সংগৃহীত দুধ গ্রো-আপ এর লোক এসে আমার কাছ থেকে নগদ কিনে নিয়ে যায় সংসার আগে থেকে ভালোভাবে চলছে বড় মেয়ে বিয়া দিছি।"