২০২১ সালে চমকে দেয়ার মত এক খবর প্রকাশ করে লন্ডনভিত্তিক পত্রিকা দ্যা গার্ডিয়ান। ব্যাক্তি-মালিকানাধীন বিশ্বের সবথেকে বেশি কৃষিজমির মালিকের নাম তারা বের করে আনে। লোকটির নাম বিল গেটস! হ্যাঁ ঠিকই পড়ছেন। প্রযুক্তি বাণিজ্যের মাধ্যমে বহুকাল বিশ্বের শীর্ষ ধনি বর্তমানে ২৭০,০০০ একর কৃষিজমির মালিক! তার মানে ঢাকা শহরের প্রায় ৪ গুণ সমান কৃষিজমি তিনি কিনে নিয়েছেন। গত ৩ বছরে সংখ্যাটা আরো বেড়েছে, তা মোটামোটি নিশ্চিতভাবেই ধারনা করা যায়। শুধু বিল গেটস না, এমাজন ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস থেকে শুরু করে পৃথিবীর সব বিলিয়নিয়াররা এখন কৃষি জমি কেনার দিকে মনোযোগ দিয়েছেন। কিন্তু কেন?
বিল গেটস খোলাখুলিভাবে বলছেন, এতে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়। পৃথিবীতে কৃষি পেশাটা কোনদিনও বিলুপ্ত হবে না। অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান রাতারাতি হারিয়ে গেছে। একসময় সার্চ ইঞ্জিনের দুনিয়া কাঁপিয়ে বেড়ানো ইয়াহুর প্রদীপ এখন নিভু নিভু। ভবিষ্যতে যে কোন যুদ্ধে বড় বড় টেক জায়ান্টদের পতন ঘটতে পারে। কিন্তু যাই হোক না কেন মানুষের বাঁচতে হলে খেতে হবে। মৌলিক চাহিদার প্রথমটা পূরণ করতে মানুষকে খাবার উৎপাদন করতেই হবে। আর তাই কৃষি বাণিজ্য হয়ে উঠেছে সবচেয়ে বেশি টেকসই ব্যবসা।
কৃষি চিরকালই সবচেয়ে টেকসই ব্যবসা ছিল কিন্তু মানুষ নতুন করে তা আবার আমলে নেওয়া শুরু করেছে। তবে বিলিয়নিয়ারদের প্রথম ভাবনা তৎক্ষণাৎ টাকা কামানো। এখানেই লুকিয়ে আছে আরেকটা মজার ব্যাপার। জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা FAO এর মতে কৃষিকাজে বিনিয়োগ করলে মুনাফা আসতে পারে ২৫% পর্যন্ত!
আর এসকল কারণে বর্তমানে কৃষিখাতে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত হচ্ছে মানুষ। একাধিক গবেষণাতেও তাই দেখা গেছে।
তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক আন্তর্জাতিক অর্থায়ন সংস্থাগুলোকে জানিয়েছিলেন, আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশে কৃষির আধুনিকায়ন এবং উন্নত প্রযুক্তির সংযোগ ঘটাতে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন।
তবে আমরা কেউই বিল গেটস না যে লক্ষ লক্ষ একর জমি কিনে ফেলব অথবা দুর্দান্ত প্রযুক্তি নিয়ে আসব কৃষকের মাঠে! আর এজন্যই এগ্রো-ফার্মগুলো সবাইকে বিনিয়োগ করার সুযোগ করে দিচ্ছে। দেশের বাইরে এরকম বিনিয়োগ কয়েক যুগ ধরে চলে আসছে। সম্প্রতি বাংলাদেশেও এধরনের বিনিয়োগের সুযোগ করে দিচ্ছে GrowUp।
কৃষি আর মাটি একই সুতায় গাঁথা। আর মাটির কাজে পৌছাতে হলে যেতে হবে গ্রামগঞ্জে। আর তাই GrowUp নামে এই কৃষি উদ্যোগের শুরু করেছে Rural Organization for Social Advancement (ROSA) নামের একটি এনজিও যারা ৩০ বছরের সময়ের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের কৃষিখাতের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রকল্প এবং সময় ভেদে গ্রো-আপ বিনিয়োগকারিকে ১৫% থেকে ৩৭% রিটার্ন দিচ্ছে। এছাড়াও স্ট্যাম্পে চুক্তির মাধ্যমে বিনিয়োগকারিদের নিশ্চয়তা প্রদান করে থাকে।